ঢাকা ০১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিকৃবির উদ্ভাবিত শিমে ব্যাপক সাফল্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৩২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অগাস্ট ২০২০
  • ১৭৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শিম শীতকালীন সবজি হলেও বর্ষায় এর চাষ করে ব্যাপক সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ডেঙ্গার বন গ্রামের চাষি শিপন মিয়া ও তার চাচা আহসান হাবিব। তাদের অসময়ে এ শিম চাষে উৎসাহিত করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। আর এ গবেষক দলই হলেন নতুন জাতের এ শিমের উদ্ভাবক।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মুনালিসা সুইটি জানান, শিম অত্যন্ত একটি পুষ্টিকর ফসল। এটি সাধারণত শীত মৌসুমেই দেশে চাষাবাদ হয়ে থাকে। এ ফসলটি কিভাবে সারাবছর পাওয়ার বিষয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ২০১৫ সালে গবেষণা শুরু করেন। এ গবেষক দলের পুরো নেতৃত্ব দেন ড. শহীদুল ইসলাম। অত্যন্ত জটিল এ গবেষণাটি মূলত সাত থেকে আট বছর সময় ব্যয় হওয়ার কথা। কিন্তু গবেষক দলের একান্ত প্রচেষ্টায় কম সময়ে ২০১৮ সালে নতুন শিমবীজ উদ্ভাবনে সফলতা দেখা দেয়। গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে চাষের জন্য শিম বীজ সিকৃবি (সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)-এক ও সিকৃবি-২ উদ্ভাবন করা হয়। সাদা জাতের ফুল জাতীয় শিম হচ্ছে সিকৃবি- এক ও বেগুনী জাত সিকৃবি-দুই।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ২০১৮ সালে প্রাথমিক মাঠ পর্যায়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৫০ গ্রাম বীজ স্থানীয় চাষিদের দেয়া হয়। তখন তিন থেকে পাঁচ শতাংশ জমিতে কৃষকেরা পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়। প্রথমদিকে ফলনে তেমন একটি সফলতা দেখা যায়নি।

কৃষি বিভাগ বলছে, নতুন জাতের বীজ হওয়াতে পুরো বিষয়টি প্রথমে কৃষকেরা বুঝে উঠতে পারেনি। এ বছর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সাতজন কৃষক নতুন এ দুটি জাতের শিম চাষ করেন। এরমধ্যে আশিদ্রোন ইউপির ডেঙ্গার বন গ্রামের শিপন মিয়া ও আহসান হাবিব বিশ শতাংশ করে মোট চল্লিশ শতাংশ জমিতে শিম লাগিয়েছেন। শীতের শিম বর্ষায় চাষাবাদ করে তাদের দু‘জনের ব্যাপক সফলতা এসেছে।

শিপন মিয়া জানালেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এর আগেও দু‘বার এ শিম চাষ করেন। নতুন হওয়াতে প্রথমে তেমন একটি ভালো হয়নি। তারপরও আট শতাংশ জমিতে চাষ করে ষাট হাজার টাকায় আয় করেন। এ বছর শিপন মিয়া ও তার চাচা আহসান হাবিবকে ৪৫টি বীজ দেয়া হয়েছে। তারা চাচা-ভাতিজা দু‘জন মিলে চল্লিশ শতাংশ জমিতে শিম চাষ করেছেন।

তারা জানান, জমিতে আশাতীত ফলন এসেছে। প্রতি সপ্তাতে কম করে হলেও ৭০ কেজি শিম জমি থেকে উঠাতে পারছেন। বর্ষায় নতুন সবজি শিম হওয়াতে এলাকায় চাহিদাও অনেক। প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দুই লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছেন। তাদের জমিতে এখনো প্রচুর পরিমাণ শিম রয়েছে। এবারের শীতের আগ পর্যন্ত শিম বিক্রি করতে পারবেন।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ সাফল্য উদ্ভাবিত বীজ থেকে পাওয়া গেলেও এখনো সে বীজ বাজারজাত হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সিকৃবির উদ্ভাবিত শিমে ব্যাপক সাফল্য

আপডেট টাইম : ০৭:৩২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শিম শীতকালীন সবজি হলেও বর্ষায় এর চাষ করে ব্যাপক সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ডেঙ্গার বন গ্রামের চাষি শিপন মিয়া ও তার চাচা আহসান হাবিব। তাদের অসময়ে এ শিম চাষে উৎসাহিত করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। আর এ গবেষক দলই হলেন নতুন জাতের এ শিমের উদ্ভাবক।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মুনালিসা সুইটি জানান, শিম অত্যন্ত একটি পুষ্টিকর ফসল। এটি সাধারণত শীত মৌসুমেই দেশে চাষাবাদ হয়ে থাকে। এ ফসলটি কিভাবে সারাবছর পাওয়ার বিষয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ২০১৫ সালে গবেষণা শুরু করেন। এ গবেষক দলের পুরো নেতৃত্ব দেন ড. শহীদুল ইসলাম। অত্যন্ত জটিল এ গবেষণাটি মূলত সাত থেকে আট বছর সময় ব্যয় হওয়ার কথা। কিন্তু গবেষক দলের একান্ত প্রচেষ্টায় কম সময়ে ২০১৮ সালে নতুন শিমবীজ উদ্ভাবনে সফলতা দেখা দেয়। গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে চাষের জন্য শিম বীজ সিকৃবি (সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)-এক ও সিকৃবি-২ উদ্ভাবন করা হয়। সাদা জাতের ফুল জাতীয় শিম হচ্ছে সিকৃবি- এক ও বেগুনী জাত সিকৃবি-দুই।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ২০১৮ সালে প্রাথমিক মাঠ পর্যায়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৫০ গ্রাম বীজ স্থানীয় চাষিদের দেয়া হয়। তখন তিন থেকে পাঁচ শতাংশ জমিতে কৃষকেরা পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়। প্রথমদিকে ফলনে তেমন একটি সফলতা দেখা যায়নি।

কৃষি বিভাগ বলছে, নতুন জাতের বীজ হওয়াতে পুরো বিষয়টি প্রথমে কৃষকেরা বুঝে উঠতে পারেনি। এ বছর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সাতজন কৃষক নতুন এ দুটি জাতের শিম চাষ করেন। এরমধ্যে আশিদ্রোন ইউপির ডেঙ্গার বন গ্রামের শিপন মিয়া ও আহসান হাবিব বিশ শতাংশ করে মোট চল্লিশ শতাংশ জমিতে শিম লাগিয়েছেন। শীতের শিম বর্ষায় চাষাবাদ করে তাদের দু‘জনের ব্যাপক সফলতা এসেছে।

শিপন মিয়া জানালেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এর আগেও দু‘বার এ শিম চাষ করেন। নতুন হওয়াতে প্রথমে তেমন একটি ভালো হয়নি। তারপরও আট শতাংশ জমিতে চাষ করে ষাট হাজার টাকায় আয় করেন। এ বছর শিপন মিয়া ও তার চাচা আহসান হাবিবকে ৪৫টি বীজ দেয়া হয়েছে। তারা চাচা-ভাতিজা দু‘জন মিলে চল্লিশ শতাংশ জমিতে শিম চাষ করেছেন।

তারা জানান, জমিতে আশাতীত ফলন এসেছে। প্রতি সপ্তাতে কম করে হলেও ৭০ কেজি শিম জমি থেকে উঠাতে পারছেন। বর্ষায় নতুন সবজি শিম হওয়াতে এলাকায় চাহিদাও অনেক। প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দুই লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছেন। তাদের জমিতে এখনো প্রচুর পরিমাণ শিম রয়েছে। এবারের শীতের আগ পর্যন্ত শিম বিক্রি করতে পারবেন।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ সাফল্য উদ্ভাবিত বীজ থেকে পাওয়া গেলেও এখনো সে বীজ বাজারজাত হয়নি।